দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের ক্ষেত, হাওড়-বাওড় ও নদ-নদী বিধৌত প্রকৃতির এক অনন্য লীলাভূমি গোপালগঞ্জ জেলা। এ জেলার টুঙ্গীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালী জাতি ছিনিয়ে নিয়ে এসেছিল আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা, সে স্বপ্ন বুকে জড়িয়ে গোপালগঞ্জের মাটিতেই চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এই গোপালগঞ্জেরই কৃতিসন্তান। গোপালগঞ্জ জেলা ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত।গোপালগঞ্জের উত্তরে ফরিদপুর জেলা, দক্ষিণে পিরোজপুর ও বাগেরহাট জেলা, পূবে মাদারীপুর ও বরিশাল জেলা এবং পশ্চিমে নড়াইল জেলা। গোপালগঞ্জের আয়তন ১৪৮৯.৯২ বর্গকিমি: এবং জনসংখ্যা ১১.৬৫ লক্ষ (প্রায়) । বর্তমানে শেখ ইউসুফ হারুন জেলা প্রশাসক হিসেবে কর্মরত আছেন।এই ওয়েবসাইটটির মাধ্যমে গোপালগঞ্জ জেলা সংশ্লিষ্ট যাবতীয় তথ্য উপাত্ত জনগণের সামনে তুলে ধরতে পারব বলে আমরা আশা করি। পাশাপাশি এর মাধ্যমে জেলা প্রশাসক সহ অন্যান্য জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সাথে টেলিফোন এবং ই-মেইলে যোগাযোগেরও সুযোগ থাকছে।গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় এবং দেশে ই-গভর্ন্যান্স কার্যক্রম বাস্তবায়নে আমাদের এ উদ্যোগ সহায়ক বলে আমরা আশা করি।

পটভূমি

 গোপালগঞ্জ জেলার পটভূমি


মধুমতির কোল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে গোপালগঞ্জ এর সভ্যতা-সংস্কৃতি-অবকাঠামো।  ব্রিটিশ শাসন  আমলের পূর্বে এ এলাকাটি বঙ্গীয় সমতট অঞ্চলের অন্তর্গত ছিল। চিরস্থায়ী  বন্দোবস্তের (১৭৯৩) সময়  গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর ছিল যশোর জেলার অন্তর্গত আর বাকি অংশ ছিল ফরিদপুর জেলার সঙ্গে। ১৮০৭ সালে মুকসুদপুর থানা যশোর থেকে ফরিদপুরের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। ১৮১১ সালে ফরিদপুর শহরে কোর্ট বিল্ডিং নির্মিত হয়। এ সময়কে ফরিদপুর জেলার প্রতিষ্ঠা কাল ধরা হয়। চন্দনা ও মধুমতি নদী যশোর ও ফরিদপুর জেলার মধ্যকার বিভক্তি রেখা হিসেবে পরিগণিত হয়। তখন গোপালগঞ্জ-মাদারীপুর এলাকা ছিল   বিশাল জলাভূমি। এখানে নৌ-ডাকাতির  প্রকোপ ছিল বেশী। তাই ১৮৫৪ সালে মাদারীপুরে একটি মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয়। এর আগে মাদারীপুর অঞ্চল ছিল বাকেরগঞ্জ জেলার অন্তর্গত। ১৮৭১ সালে গোয়ালন্দ মহকুমা সৃষ্টি হয়। ১৮৭২ সালে মাদারীপুর মহকুমায় গোপালগঞ্জ নামে একটি থানা গঠিত হয়। ১৮৭৩ সালে মাদারীপুর মহকুমাকে বাকেরগঞ্জ জেলা থেকে ফরিদপুর জেলার সঙ্গে যুক্ত করা হয়।

১৯০৫ সালে ফরিদপুর জেলা ছিল বাংলার আসাম বিভাগের অন্তর্ভুক্ত।১৯১২ সালে এটি অবিভক্ত বাংলার অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। ১৯০৯ সালে মাদারীপুর মহকুমাকে ভেঙ্গে গোপালগঞ্জ মহকুমা গঠন করা হয়। গোপালগঞ্জ এবং কোটালীপাড়া থানার সঙ্গে ফরিদপুর মহকুমার মুকসুদপুর থানাকে নবগঠিত গোপালগঞ্জ মহকুমার অন্তর্ভূক্ত করা হয়। গোপালগঞ্জ সদর থানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৮৭০ সালে কিন্তু এটি শহরে উন্নীত হয় পরে। গোপালগঞ্জ মহকুমার প্রথম মহকুমা প্রশাসক ছিলেন জনাব সুরেস চন্দ্র সেন। ১৯১০ সালে মহকুমা অফিসারের বেঞ্চ কোর্ট উন্নীত হলো ফৌজদারী কোর্টে। ১৯২৫ সালে সিভিল কোর্ট চালু হয়।


১৯০৯ সালে মহকুমা হওয়ার পরে গোপালগঞ্জের আয়তনের কোন পরিবর্তন হয়নি। তবে এর থানা সংখ্যা ০৩ থেকে ০৫ এ উন্নীত হয়। ১৯৩৬ সালে মুকসুদপুর থানার অংশ থেকে কাশিয়ানী থানা গঠিত হয়। ১৯৭৪ সালে গোপালগঞ্জ সদর থানাকে ভেঙ্গে টুংগীপাড়া নামক নতুন একটি থানা গঠন করা হয়। ১৯৮৪ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি গোপালগঞ্জ মহকুমাকে  জেলায় উন্নীত করা হয়।  গোপালগঞ্জের প্রথম জেলা প্রশাসক ছিলেন  এ. এফ. এম. এহিয়া চৌধুরী।

            বর্তমানে গোপালগঞ্জ জেলা ০৫ টি উপজেলা, ০৫ টি থানা, ০৪ টি পৌরসভা, ৬৮টি ইউনিয়ন এবং ৬১৮ টি মৌজা নিয়ে গঠিত। বর্তমানে শেখ ইউসুফ হারুন জেলা প্রশাসক হিসেবে কর্মরত আছেন।